Tuesday, 28 January 2014

অঞ্জলী ভরা তুমি

সমুদ্র পাড়ে দাড়িয়ে চুলের গোছা উড়িয়ে সেই হাসি হেসে 
তুমি কি ভেবেছিলে করবে আমায় পাগল ,যাব আমি ভেসে? 
যেই মুহুর্তে দেখেছি তোমায় আমি সমুদ্রের নোনা জলের ভেজা হাওয়ায়- 
নিজেকে আকাশের কাছাকাছি পৌছে হাতছানি দিয়ে ডেকেছ আমায়, 
মনকে বুঝিয়ে বলেছি চেয় না উড়তে সেই আকাশের গায়ে 
কখন যে তুমি ঢুকে বসে আছো আমার ভেতরে গুটি গুটি পায়ে।
এভাবেই যখন স্বপ্নের রাজ্যে দি আমি পাড়ি রাতের তারাদের হাতে হাত রেখে,
তোমায় দেখি দাড়িয়ে দু হাত মেলে চাঁদের পাহাড়ের দ্বারে উঠলে হেসে আমায় দেখে,
যূগ যুগ ধরে কেন আমি শুধু পেয়ে যাই তোমায় আমার স্বপন মাঝে,
কিছুতেই পারিনা ভুলিতে শত সহস্র কাজের মাঝে সকাল ও সাঝে,
কখনো কি ভেবেছ আমায় আমার মতো করে ?
এ দুনিয়ায় হায় তাই বা কেউ কি করে পারে-
কখনো আমায় দিয়েছ তোমার ভালোবাসার এক মুঠো অঞ্জলী,
চিরবঞ্চিত তাই আমি নিজেকে কিকরে বলি?
হায় যদি এভাবেই পারি যেতে উড়ে দুর আকাশের পানে সঙ্গোপনে,
যেখানে আছো তুমি ভেসে শুধু এক গাল হাসি নিয়ে চেয়ে মোর পানে।

Sunday, 26 January 2014

ঝোড়ো হাওয়া

ঠিক যেন খোলা জানলা দিয়ে ঢুকে পরা এক ঝলক ঝড়ো বাতাস, 
জিনিস উল্টে পাল্টে পর্দা উড়িয়ে  সব উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া মাতাল হাসি, 
কথার বানে ভেসে যাবে খড়কুটোর মতো , 
বাঁধ্ভাঙ্গা বেনো জলের ঢেঊ ভাসিয়ে নিয়ে যায় সব আড়াল, 
প্রথম দর্শনের জের সামলে উঠে ঢুকে যেতে হয় মনসমুদ্রে- 
সাঁতরে যদি পার খুজে পাওয়া যায় উঠে আসবে মণিমুক্তোর মালা- 
ভালোলাগার রেশ লেগে থাকবে , আবার চাইবে আসুক না সেই ঝড়। 
কখনো বা শান্ত নদীর মৃদুমন্দ বাতাসের ওঠানো ছোট্ট ঢেউ, 
কথার পরতে পরতে জড়ানো বিচক্ষণতার মোড়ক, 
মিষ্টি হাসির হালকা চালে চাঁদের আলোর স্নিগ্ধতা, 
কথার মাঝে ছোট্ট ফাঁকে চিন্তার অ্ভিক্ষেপ- 
ঠিক যেন গল্প কথার আসরে ঠাকুমা পেতেছে ঝুলি, 
ভাবনায় এলেই ঠোঁটের কোনায় আসে এক চিলতে হাসি। 
কথা চরিত্রের সেই মুখ আঁকতে বসে শিল্পীর মনে ভাসে সে, 
শব্দের ছেড়া টুকরোগুলো সাঁতরে বেড়ায় মাথার আনাচে কোনাচে, 
জীবনের গল্পকথায় সব চরিত্রের দাগ গভীরে বসে না, 
কবির কল্পনায় সে বাস্তবের ছোঁয়া পেয়ে জেকে বসে সাদা পাতায়, 
আবার আশায় পথচেয়ে থাকা কখন আসবে কিছু মুহুর্তের এক ভাগ।

হাওয়া হাসি ও আমি

এক ঝলক সাইক্লোনের হাওয়া ঝাপটা মেরে যায়, 
এক ঝলক ঠান্ডা নদীর হাওয়া হালকা করে নাক চোখ মুখ ছুয়ে যায়- 
সমুদ্রপাড়ের পাগলা হাওয়া আমায় মাতাল করে, 
কখনো আবার পাইন গাছের পাতায় লুকোচুরি খেলা পাহাড়ী হাওয়া আমায় উদাস করে, 
আমার ইচ্ছে করে আমি মাতাল হাওয়া মেখে সুখস্নান  করি। 

সকালের সুর্য আমায় মনে পড়ায় এক টুকরো হাসি, 
দুপুর সুর্যের গনগনে ভাব আমায় দেখায় সেই ক্পট ক্রোধের আঁখি, 
সুর্যাস্তের লালিমা শুধু ভেসে ওঠে  কিশোরীর লাজুক গালে, 
চাঁদের হাসিতে আছে ম্লান এক ভালোলাগার ছোঁয়া- 
কিন্তু আমার দেখা তাঁর সেই হাসিটা আসলে হাসির সেরা। 

সমাজ আমায় শিখিয়েছে মনের কথা মনে চেপে রেখে সভ্য সমাজে চলতে, 
সজন শিখিয়েছে কিভাবে গলা চেপে ধরতে হয় নিজের ইচ্ছে কে, 
পারিবারিক ঐতিহ্য বলেছে তুমি বলিপ্রদত্ত সমাজের জন্য, 
আজ আমি কি সুন্দর ভাবে মানিয়ে নিয়েছি কলুর বলদের মতো, 
তাই সকলের ইচ্ছে আমার ইচ্ছে , সমাজের ভালোলাগা আমার ভাললাগা, 
আমার পরিচয় সভ্য ভদ্র সমাজবদ্ধ জীব । 

মাঝরাতের মানসিক সাইক্লোন আমায় জ্বালায় তাঁকে ঘুম থেকে জাগিয়ে ওঠার অসামাজিক ইচ্ছে নিয়ে, 
কিন্তু সমাজের আমি গলা চেপে ধরে বলে 
তোমার উচিত ঈশ্বরের নাম নিয়ে ঘুমের রাজ্যে পাড়ি দেওয়া, 
হা হা হা হায় ঈশ্বর তোমার কি সুন্দর সৃষ্টির খেলা।

Friday, 24 January 2014

কিছু মুহুর্ত

মেঘকেটে ভেসে আসা সুর্যের হাসিটাকে মেখে নিলাম গায়ে- 
নীলাআকাশের গায়ে উড়ে যাওয়া সাদা বকের পাখায় আবার একে দিলাম নিজের আঁকিবুকি, 
নিজের মনে হেসে উঠে আশার দ্বীপ দিলেম জ্বেলে, 
যদি আমার কবিতার প্রলাপ সে পড়ে নেয় বকের পাখায়, 
ভাবতে ভাবতে চাদ উঁকি মেরে মুচকি হেসে হাত্ছানি দিল- 
পরমুহুর্তে ভেসে আসা দুরাভাসে সেই চিরআকাঙ্খিত স্বর, 
দিনের শুরু হলো ঝঙ্কৃত শব্দবিন্দু দিয়ে, 
ভাললাগার আমেজ ভাসিয়ে নিয়ে গেল আনন্দ সমুদ্রে, 
শত কাজের মাঝে শুধু উকি মেরে যায় সেই দৃষ্টি- 
আমার শব্দ ঝর্ণা উত্সমুখ থেকে বহমানতা পায় তার ছোঁয়ায়। 
মাঝরাতের নির্জনতা নিয়ে আসে একরাশ সুখ, 
নিজের ভাবনাকে দৃশ্যত দিয়ে দি লাগামছাড়া অধিকার, 
ঠিক তখন সে উড়ে যায় সেই আরব সাগরের তীরে , 
সেই বেলাভুমির হাতছানি শুধু ধুয়ে মুছে দেয় ক্লান্তির গ্লানি, 
মনের কোনায় জমে থাকা কৈশোরের স্মৃতি বর্তমানকে আড়াল করে 
শুধু তোলপাড় করে প্রতিটি পলের অস্তিত্বকে। 
কেন তুমি আজও বেঁচে আছো প্রতিটি মুহুর্তে আমার? 
কেন দিনের কয়েকটি মুহুর্ত শুধু দিয়ে যায় দিনের আশা? 
কেন সেই হাসি মন কেমন করা এমনি এখনো? 
আমার অস্তিত্ব বেঁচে  থাকুক হাজার বছর ধরে আকড়ে সেই স্মৃতি।

Wednesday, 22 January 2014

আবার একটা দিন

একটুকরো বিষণ্ণতায় মোড়া দিনটা কেমন ভাবে কেটে গেলো, 
সকাল  সুর্যের উজ্জ্বলতা মনের  মেঘ কাটাতে চেষ্টা করেছিল, 
ঝড়ের মত কেটে গেল এক প্রহর , শান্ত হয়ে এসেছিল মন, 
কিন্তু সেই চিরপরিচিত হাসিটা এল ম্লান হয়ে, 
বিধাতা নতুন রূপে নিয়েছে খানিকটা তার ধৈর্যের পরীক্ষা, 
শারীরিক কষ্টের রূপে করে গেছে আশীর্বাদ আবার, 
হাসিমুখে মেনে নিয়ে চুপ করে থেকেছে শুধু- 
শুধু কয়েকটি শব্দের মাঝে লুকনো ছিল এক্গুছ্ছ ভালোলাগা, 
সে যে এরকমই ছিল চিরকাল। 
কর্মব্যাস্ত অপরাহ্নের মু্হুর্তগুলো মোড়া ছিল কোলাহলের ভীড়ে, 
মনের সেতারে ছিল না আনন্দের সুর- 
দিনগুলো কেন যে এভাবে ছন্দহীনতায় কেটে যায়, 
ক্লান্তিহীন দিনের শেষে রাতের অন্ধকার অপেক্ষার পলে ভরে যায়, 
হয়তো এখুনি ভেসে আসে শব্দের ছন্দধ্বনি, 
সেই হাসি সেই কথা আবার বয়ে আনবে আগামীর আশার আলো, 
স্বপ্নের দেশে নেশার আবেশে ধরা দেবে সে নিজরূপে, 
চলো ভেসে যাই আনন্দসাগরে হাতে রেখে হাত- 
আবার একটা দিনের শেষে ভেসে আসে যন্ত্রসঙ্গীতের ধ্বনি, 
সে ও আমি, কেটে গেলো আবার একটা দিন।

কালো দিন

এক একটা দিন ঠিক যেন ঝড়ের মতো- 
সকালে সুর্যের আলোটা কিন্তু ছিল ভীষণ উজ্জ্বল, 
হঠাত অন্ধকার হয়ে আসা সংবাদ এল বার্তাবহের মুখে, 
প্রাণ হারিয়ে গেছে মাঠের ওপারে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে- 
গলায় চেপে বসেছে লৌহ পিঞ্জর , বিধাতার গল্পের এখানেই শেষ। 
আবার আরেকটা দিন আসবে নিজের রূপ রস নিয়ে, 
শুধু থাকবে না একটি মানুষের নিঃশ্বাসের আওয়াজ, 
থাকবে স্মৃতিচিহ্নের মতো কিছু হাসি কিছু কথা- 
ওরা কাজ করে বলেই না পৃথিবী চলছে এভাবে নিজের অক্ষে- 
দিনের্ শেষে ভুলে যাবে সব ওর অস্তিত্ব, 
আবার শুরু হবে নিরন্তর যন্ত্রের শব্দ। 
আমার শ্রান্তি খুজে পেতে চাইছিল সেই  কাঁধ, 
শুধু মাথা রেখে ঘুমনো যায় সব ভুলে শিশুর মতো, 
সেই শিউলির গন্ধ শুধু আমায় এনে দেয় মহুয়ার নেশা, 
ঘুমের মাঝে আমি চলে যেতে পারতাম স্বপ্নের রাজ্যে, 
সেখানে শুধু আমি, সে ও স্বপ্ন, নেই দুঃখের কোন ছাপ- 
আলতো হাতে মাথার চুলে বিলিকেটে শুধু শুনে নিল আমার গল্পের শেষ- 
আশ্বাসের ঠান্ডা করকল্পে থাকতো সান্তনার ছোয়া, 
আসি যাই চলে ঘুমের দেশে শুধু তার পাখায় করে প্রাণের সঞ্চার।

এক পশলা বৃষ্টি ঠান্ডা এনে দেয়

এক পশলা বৃষ্টি  ঠান্ডা এনে দেয়- 
এক মুঠো বাতাস বৃষ্টির গন্ধ এনে দেয়, 
কিছু কথা কিছু হাসি এনে দেয় ভাললাগার নেশা, 
মাটির গন্ধও আমায় করে মাতাল, 
এক টুকরো ভালোবাসা বয়ে আনে বুকের কাঁপন- 
এক অজানা আনন্দের শিহরণ শুধু বয়ে আনে আবেশ, 
কখনো শুধু অজানা না পাওয়া বয়ে আনে এক বুক কান্না। 
কেউ কি কখনো গল্প করেছে আকাশের তারাদের সাথে? 
কেউ কি কানে ফিসফিসিয়েছে জানলার ফাঁক দিয়ে আসা হাওয়ার সাথে? 
কেউ কি মেঘের হাতে পাঠায় বার্তা দুরবাসী প্রেয়সীর কাছে? 
কেউ কি কখনো স্নান করেছে চাঁদের  আলোর ঝর্ণায়? 
কেউ কি কখনো ভালবেসেছে লাগামছাড়া উন্মাদের মতো? 

আজ ও যে আমি ভালোবাসি প্রাণখুলে হাসতে, 
আজ ও আমি ভালোবাসি সোঁদা মাটির গন্ধ, 
আজ ও  আমায় ভাবায় একটা ভালো কবিতা, 
আজ ও আমি স্বপ্ন দেখে হেসে উঠি আনন্দে, 
আজ ও আমার দুচোখ  ভাসে হারিয়ে যাওয়া না পাওয়ার দুঃখে। 

এক পশলা বৃষ্টি আজ ও ঠান্ডা এনে দেয়।

Friday, 17 January 2014

স্ট্যাচু

কখনো আমার মনে হয় আমি পার্কের মাঝে দাড়ানো একটি স্ট্যাচু, 
হয়তো বন্ধক  দিয়েছি আমার সব ভাললাগার খুঁটিনাটি, 
আকাশের দিকে আধবোজা চোখে তাকিয়ে 
পৃথিবীর প্রতি ঔদাসিন্য নিয়ে 
দুপায়ে দাড়িয়ে আছি, কি এসে দাড়ালো আমার ছায়ায়- 
কে আড়চোখে তাকিয়ে মুচকি হেসে পাশ কাটিয়ে গেল- 
কখন বা হয়তো উড়ন্ত পাখী কাঁধে এসে বসে কাজ সেরে নেয়, 
বয়েই গেল পৃথিবীর গতানুগতিকতায়। 
কখন যে জীবনের শুরুতে সে এসে দাড়িয়েছিল আমার ছায়ায়- 
হাসিমুখে তুলেছিল কলরোল সেই কৈশোর প্রাণে, 
কিন্তু আমি তো নিস্প্রাণ অবয়ব ভাবলেশশুন্য অপ্রাণ- 
জবাবে ছিল না উচ্ছ্বাসের অভিব্যাক্তি, 
ছিল না আবেগের কোন ঢল- 
তাই তো না বুঝে নিস্প্রাণের আকুলতা 
মিষ্টি হেসে খানিক বসে নাড়িয়ে দিয়ে আমার মুল- 
কখন যে সে হারিয়ে গেল ভীড়ের মাঝে । 
আজও বহুবর্ষ বাদে চিনে নিয়ে সেই রূপ রস গন্ধ 
নড়ে ওঠে নিস্প্রাণ স্ট্যাচু, 
যখন সে এসে দাড়ায় সেই হাসিনিয়ে আমার ছায়ায়, 
রক্তস্রোতে ওঠে সেই পরিচিত কোলাহল, 
প্রাণের ছোয়ায় উঠ্ল জেগে পার্কের মাঝে দাড়ান সেই স্ট্যাচু আমি।

পুর্ণিমার চাঁদ

কোথাও লুকিয়ে ছিল সেই এক টুকরো  পুর্ণিমার চাঁদ, 
কিছুতেই পারেনি হাসিটা কে মুছে কলঙ্কের দাগ গলায় পরে নিতে- 
অমাব্স্যার পরে ঠিক হাসির মুক্তমালা ছড়িয়ে 
আলোর  বন্যায় ভাসিয়ে নিয়ে যায় মাঠ ঘাট নদী। 
সেই ছবিটা আমায় খালি মনে করিয়ে দেয় সেই চাঁদের কথা- 
নিবারণ চক্কত্তি ভাবের নেশায় বুঁদ হয়ে রবীন্দ্রনাথ কে গালি দিয়েও 
যেই মুহুর্তে মনে করে সেই হাসি সেই মুখ নিজের মনে গান গেয়ে ওঠে, 
নিজেকে ভিঞ্চির রূপে হাতে কলম নিয়ে একে ফেলে কবিতায় মোনালিসা। 
কখনো কি মুখ ভার করেছে পুর্ণিমার চাঁদ? 
পারেনি তো বিধাতা তারে ডোবাতে দুঃখ সাগরে- 
দেহের যন্ত্রনা, মনের অবসাদ ভুলে হেসে ওঠে কলকলিয়ে, 
তাই তো সে নিবারণ চক্কত্তির মোনালিসা। 
সেদিন যখন দিলাম তাকে দুঃখের বোঝা চাপিয়ে 
হাসিমুখে মেনে নিয়ে বছর পাড়ে হারিয়ে গেল ভীড়ের মিছিলে, 
মনের মাঝে লুকিয়ে রেখে দুঃখ কনা জীবন বয়ে গেল নিজের খাতে, 
কালের চাকা ঘুরে গিয়ে ফিরে পাওয়া পুর্ণিমার চাদ আজও এক্ভাবে ঊচ্ছ্বল,কলঙ্কহীন।

Wednesday, 15 January 2014

কবিতা লেখা আজ মানা

আমার আজ কবিতা লেখা মানা 
কারনটা কি তা নয়কো অজানা, 
করেও দেখেছি আমি বায়না 
মানতে সে কিছুতেই রাজি না। 

বলেছে সে আজ নাও বিশ্রাম 
কিন্তু আমি যে পাব না আরাম, 
যদি দিয়ে দি আজ বিরাম, 
জানি জীবনে ঘটবে না ব্যারাম। 

তবুও কেন যে কলম উঠে এল হাতে 
আজ যা লিখছি দেওয়া কি যাবে পাতে? 
থাক না হয় লেখাটা যাবে খরচের খাতে 
তাই বলে কি লিখব না আজ রাতে? 

একটাই শুধু আমার ভয় 
যদি জানতে তাকে তবে তা অমুলক নয়, 
কাল সে তো জানতে চাইবে এটা কি করে হয় 
কাপছে আমার হাত করছি নয়ছয়। 

লিখতে গেলেই আসে ভেসে সেই মুখ 
ভাব্নায় সে আছে ঘিরে লেখাতে তাই তো এতো সুখ, 
যতই করুক মানা মেটে না তো ভুখ, 
আসলে সে মোটেই নয় ত্রমন রুখ্সুখ। 

মিষ্টি হেসে বলবে সে আমাকে 
বদলানো তো গেল না তোমাকে, 
ক্লান্ত দেহে বললাম ডেকে নিতে ঘুমটাকে, 
আবার পড়লে কবিতার লোভের ফাঁকে। 

জবাবে বোকা হেসে বলব তারে আমি 
দোহাই কবিতার নামে ক্ষম মোরে তুমি, 
আর কোনদিন করবো না মনমানি, 
মেনে নেবে সে তা আমি জানি।

প্রেয়সী

জীবনের মুখের মিছিলে চিরকাল ভেসে ওঠা সেই মুখ, 
কেমন যেন এক অবয়বহীনতা নিয়েছে মোর প্রেয়সীর রূপ, 
সীমাহীন বালুচরের ঝিনুক সমুদ্রে খুজে ফেরা মুক্তোর মতো 
হৃদয়ের অন্ত:অলিন্দে লুকিয়ে রাখা একবিন্দু শিশিরকনা- 
প্রাণখোলা  হাসির শিশুসারল্য ছাপ ফেলে গেছে সেই শৈশবে, 
কলহের কলরোল আজও ওঠায় ঝড় প্রাণের মাঝে। 
হঠাত যখন ভেসে ওঠে ম্লান হাসির মেঘের ছোঁয়া- 
অবয়বের রূপ পার হয়ে ছুয়ে দেখি মনের আয়না, 
শুধু তাঁরে নিঃশব্দে জানাই ভালবাসার অঞ্জলি, 
আমার বিশ্বে আছে তোমার সর্বময় বিচরণ, 
অদৃশ্য যন্ত্রণা যখন জাগায় দ্বিধার কুয়াশা , 
কেন শুধু একবার ফিরে দেখ না আমার মনের আয়নায়- 
কি সে প্রতিরূপ ভেসে ওঠে জেনে নিও। 
শত বাঁধা শত কাটাছেড়া , শত বিধাতার ছেড়া কুয়াশার মালা 
যত তুমি পার করে নাও চেষ্টা , 
সেই হাসি সেই কথা সেই ছোট ছোট খুনশুটি, 
সেই শিউলির গন্ধে ভরা আমার প্রেয়সীর ভরা রূপ, 
আজও একই রূপে ভাবায় ,আমায় ভাসিয়ে নিয়ে যায় 
স্বপ্নের মাঝে জেগে ওঠা আমি দেখি চোখ খুলে- 
দীর্ঘায়ত মায়াভরা সেই চোখ হাসিমুখে চেয়ে মোর পানে।

তুলনা

তুমি ঠিক যেন মাঝির চোখে নদীর ঢেউ- 
কখন উত্থাল কখনো শান্ত প্রবাহ বহমানতা নিয়ে, 
তোমার বুকের মাঝে বয়ে চলে অন্তহীন প্রেমের ফল্গুধারা, 
মাঝি শুধু  ধরে হাল বুক চিরে বয়ে নিয়ে যায় তার নাও- 
কখনো বা মাঝি ঝুকে পড়ে ছুঁয়ে যায় তোমার চুড়ো, 
কখনো বা মাঝি আজল ভরে পান করে তোমার সুধা, 
মাঝি গায় গান  তোমার পানে চেয়ে উদাস মনে, 
মাঝির জীবনে তুমি জড়িয়ে আছ এখানে সেখানে সর্বত্র। 

তুমি ঠিক যেন শিল্পীর চোখে ক্যানভাস- 
দিনরাত উজাড় করে দিয়ে যায় প্রাণ ,মন, ভালোবাসা, 
নিজের মনে আঁকিবুকি কাটে তোমার বুকে, 
রাতের ম্লান আলোয় তোমায় জড়িয়ে সে ঘুমিয়েও পড়ে, 
ঘরের মায়া কাটিয়ে শিল্পী শুধু মজে থাকে তোমার নেশায়, 
তোমার আয়নায়  দেখে নিজের  সৃষ্টির রূপ হয় সে মাতাল, 
কখনো বা ক্ষুধায় তৃষ্ণায় আশ্রয় নেয় প্রাণের শেষ নিঃশ্বাস , 
শিল্পীর জীবনে সব ত্যাগ সব কষ্টের শেষ  তোমার  আশ্রয়। 

তুমি ঠিক যেন কবির চোখে শব্দস্রোত , 
তোমার ধারায় স্নাত কবি আজও ভেসে যায় নিজের স্বপ্ন লোকে, 
তোমার প্রতিটি চরণে ছড়ায় ভালোবাসার আমেজ, 
তোমায় পান করে মেটায় প্রেমের তৃষ্ণা, 
তোমায় আকড়ে ধরে কবি একে ফেলে জীবনের ছবি, 
তোমার রমণে সে পায় অস্তিত্বের আশ্বাস, 
শুধু রূপ দেয় সে হৃদয়ের ভাষা তোমারি হাত ধরে, 
কবির জীবনে তুমিই শুধু জমানো কড়ি।

Friday, 10 January 2014

আরেক স্বপ্ন

ইচ্ছে করে উড়ে যাই চলে সেই স্বপ্নদেশে , 
সেখানে হয়তো লুকিয়ে তুমি নতুন বেশে, 
দুহাতে জড়িয়ে বসাবে আমায়  তোমার পাশে, 
হারাব দেহের সাড় যে আমি তোমার আবেশে । 

দেখবো তোমায় সেদিন আমি নতুন রূপে, 
ভাবতে গেলে বুকটা  যেন ওঠে কেঁপে, 
ভাবের ঘরে নিজেকে আমি দিয়েছি সঁপে, 
দেখবে কি তুমি  আমার মনের কাঁপন মেপে? 

সেদিন তুমি করলে কেন আমায় পাগল, 
দিয়েছিলে যে খুলে তোমার মনের আগল, 
হারিয়ে আমি সকল বাঁধন বাধালাম গোল, 
ঝড়ের শেষে ক্লান্ত পথিক পেল আঁচল। 

দিনের শেষে ঘুমের দেশে দিই যে পাড়ি, 
কিন্তু স্বপ্নের সাথে নেইকো আমার কোন আড়ি, 
তুমি যে এলে পড়ে তো সেই লাল পাড় শাড়ী, 
হৃদয় মাঝে তোমায় নিয়ে কাড়াকাড়ি। 

আমার মনের ঝড়ের দোলা ভাসাল তোমায় , 
তোমার মনের নরম ছোয়া কাঁপাল আমায়, 
এভাবে  কি মনের ভাষা কেউ রে জানায়, 
বিধাতার এই আজব খেলা তাকেই মানায়।

আজ ও স্বপ্নে সে এসেছিল

আজ ও স্বপ্নে  সে এসেছিল নিজের মত করে সেজে, 
বাগানের নতুন শীতের সকালের ইনকার উজ্জ্বলতা নিয়ে, 
দুপুর সুর্যের উষ্ণতা ভরা ফানুসের মতো- 
দু চোখের তারায়  ছিল অবুঝ সরলতা , 
মুখের হাসিতে ছিল দুষ্টুমির ইশারা, 
এলোচুলে হালকা চালে চলে গেল সামনে দিয়ে 
ছড়িয়ে বন্যলতার ছট্ফটানির ঢেউ- 
ভেসে এলো প্রথম সকালের শিশির ভেজা ঘাসের গন্ধ। 
আজ ও স্বপ্নে সে এসেছিল নিজের মত করে সেজে, 
আমার আমিটাকে বন্যতার জোয়ারে ভাসিয়ে নিয়ে যেতে, 
সৃষ্টি রহস্যের গভীর অনুধাবন নিয়ে , 
ভিজে চুলের ছোয়ায় ছিল বিদ্যুতের শিহরণ, 
আলিঙ্গনের গভীরতায় ছিল উচ্ছ্বাসের আভরণ, 
ঠোঁটের প্রতিটি ছোয়ায় লেখা ছিল নিয়তির অঙ্গীকার, 
আমার অস্তিত্ব কে নাড়িয়ে দিয়ে যায় সেই পরী। 
আজ ও স্বপ্নে  সে এসেছিল নিজের মত করে সেজে, 
জাগিয়ে দিয়ে আমার যৌবনের জ্বলে যাওয়া দ্বীপখানি- 
সন্ধ্যের আলোর নম্রতাকে হার মানিয়ে হেসে ওঠে, 
বাঘিণীর ক্ষিপ্রতায় হার মানিয়ে মত্ত হাতির সুরশক্তিকে, 
ভরিয়ে দিয়ে জীবনের করপুট অঞ্জলীভর ভালবাসার ঝর্নাবারিতে, 
এলোচুলের বন্যায় ঢেকে দিয়ে আমার চোখমুখ, 
শুধু বলে গেল কিছুতেই দেব না ভুলতে আমায়।

Tuesday, 7 January 2014

স্বপ্নের এলোকেশী

স্বপ্নে এসেছিল সেই এলোকেশী কপিলা, 
গভীর চোখের তারায় ফুটে ওঠা মায়ার কুয়াশা , 
হাতছানি দিয়ে যেন ডেকে নিয়ে যায় শীতের শীর্ণ নদীর বালুচরায়, 
ঠোটে মাখা ছিল আমন্ন্ত্রনের নেশা- 
স্বপ্নরাজ্যে  ভেসে যাওয়া ভাললাগার ভেলায় চড়ে , 
সে আমি আর আমাদের স্বপ্ন। 
মরালির গ্রীবা অনন্য ভঙ্গীতে শুধু মিষ্টি হেসে 
ভাষাহীন নেশায় করে পাগল মাতাল, 
স্বপ্নের রাজ্যে অগ্নুত্পাত করে আগ্নেয়গিরি, 
উত্তাপে ঝলসে যায় বহুকালের বয়ে নিয়ে চলা নৈতিকতার খোলশ, 
জেগে ওঠে চিরনতুন ভাললাগার অন্তহীন সুর, 
সে আমি আর আমাদের স্বপ্ন। 
তার ভেজা চুলের গন্ধে আমার যৌবনের নেশা, 
তার উষ্ণতা আমায় ফিরিয়ে আনে শীতের জড়তা থেকে, 
গলার সুর আমায় দিয়ে যায় নতুন করে বাঁচার ক্লোরফিল, 
গভীর থেকে উঠে আসা নতুন বর্ষার গন্ধ দেয় আমায় অক্সিজেন, 
প্রতিটি স্পর্শে শুধু তীব্র কম্পাঙ্কের ঝঙ্কার, 
সে, আমি ও আমার স্বপ্ন। 
কপালের জ্বলজলে টিপ যেন চাঁদের খসে পড়া টুকরো, 
নাকের ডগায় জমে থাকা শিশির বিন্দুতে শুকতারার লালিমা, 
রোদ চশমার আড়ালে ঢেকে রাখা রহস্যের বিন্দু, 
স্বপ্নের উষ্ণতা শুধু ছুয়ে যেতে চায় জীবনের চাওয়া পাওয়া, 
প্রতিটি পল শুধু জ্বালামুখীর লাভাস্রোতে ভেসে যাওয়া, 
সে, আমি ও আমার স্বপ্ন।